সবই বদলায় কিন্তুু কেন যেন মানুষ বদলায় না।

ঘটনা-১ঃ
এক ফ্রেন্ডের বোনের বিয়েতে গেছি । আমাদের মাঝে একজন ডিএসএলআর ওয়ালা ফ্রেন্ড ছিল । ওরে বললাম, দোস্ত- "আমাদের সবাইকে কয়েকটা ছবি তুলে দে না, আগামী এক মাস ফেসবুকে প্রোফাইল পিক দেওয়ার জন্যে টেনশন করা লাগবেনা ।" ফ্রেন্ডের উত্তর, "দোস্ত, ওয়েট কর, পরে ।"
একটু পর আমাদের সমবয়সী বরপক্ষের এক ছেলের সাথে আমাদের কথাবার্তা হল । হঠাৎ একটা ১৮-১৯ বছর বয়সী নীল শাড়ী পড়া এক সুদর্শনা ললনা কি একটা কাজে সেই ছেলেটার কাছে আসলো । ছেলেটা আমাদের সাথে মেয়েটার পরিচয় করিয়ে দিল, তখন আমার ফ্রেন্ডটা বলে ফেলল- "নীল শাড়ীতে আপনাকে অনেক সুন্দর লাগতেছে, আপনাকে কয়েকটা ছবি তুলে দিই ।"
হায়রে দুনিয়া, কেউ দশবার বললে একবার শুনেনা, আর কেউ কিছু না বলাতেও শুনে যায় ।

ঘটনা-২ঃ
ধানমন্ডি-৩২ মোড়ে দাড়িয়ে আছি, পিলখানা যাব বলে । ওদিকে বাস যায়না তাই একটা রিকশাওয়ালাকে ডাক দিলাম, আমার গন্তব্যের কথা শুনে না করে দিল । একটু পর একটা স্মার্ট তরুণী এসে ঐ রিকশাওয়ালাকে ডাক দিল, গন্তব্য পিলখানার পাশেই স্টার কাবাব, ও সানন্দে রাজি হয়ে গেল । আমি পাশেই ছিলাম, অবাক হয়ে গেলাম খুব । যে রিকশাওয়ালা একটু আগে পিলখানা যেতে বলায় আমাকে এক বাক্যে না করে দিয়েছে সে ঐ একই জায়গায় যেতে মুহূর্তেই রাজি হয়ে গেল ।

ঘটনা-৩ঃ
বাসে চড়ে মিরপুর-১০ থেকে ধানমন্ডি-২৭ আসতেছিলাম । শ্যাওড়াপাড়া থেকে ২৫-২৬ বছর বয়সী এক যাত্রী উঠলো । সাধারণত আমি বাম সাইডের সীটেই বসি, আমার সামনের সারিতে একটা সিট ফাঁকা ছিল, উনি ওখানে বসলেন । প্রচণ্ড গরম ছিল, উনি উনার পাশের সীটের মানুষটার কাছে আবদার জানালেন যেন উনাকে জানালার পাশের সীটে বসতে দেয়া হয়; পাশের মানুষটা সরাসরি না করে দিলেন । একটু পর আমার ডান সাইড থেকে এক যাত্রী নেমে গেলেন, যুবক ছেলেটা ঐ সীটে গিয়ে বসলো । শিশুমেলা পার হওয়ার পর এক তরুণী উঠলেন আমাদের বাসে, এসেই আমার সামনের ঐ আগের ফাঁকা সীটের ওখানে চলে আসলেন । পাশের মানুষটাকে বললেন, "ভাইয়া, আপনি একটু এদিকে আসেন না, আমি জানালার পাশে বসি?" ছেলেটা নিরুত্তর । মেয়েটা পুনরায় স্মিত হেসে বললেন, "ভাইয়া, প্লিজ ।" ছেলেটা তখন মেয়েটাকে জানালার পাশের সীট ফাঁকা করে দিল । একটু আগে একটা ছেলেকে সে একই আবদার ফিরিয়ে দিয়েছিল, কিন্তু মেয়ের আবদার সে ফেলতে পারলো না ।

ঘটনা-৪ঃ
সকালে এক খাবার হোটেলে নাস্তা করতেছিলাম । ম্যানেজারের সামনের টেবিলেই আমি বসেছিলাম । একটু পর এক মধ্য বয়স্ক লোক এসে ম্যানেজারের কাছে একটা ৫০০ টাকার নোট ভাংতি চাইলো, ড্রয়ারের দিকে না তাকিয়েই উনি সাফ জানিয়ে দিলেন- "না মামা, ভাংতি নেই ।" পরক্ষণেই এক মেয়ে এসে ম্যানেজারের কাছে একটা ৫০০ টাকার নোট ভাংতি চাইলো, ম্যানেজার তার ড্রয়ারের দিকে নজর দিতে দিতে বলল- "ভাংতি তো নাই ।" মেয়েটা আবেগ ধরা কণ্ঠে অনুরোধ জানালো- "একটু দেখেন না প্লিজ ।" তখন দেখি ম্যানেজার সাহেব উনাকে ৫০০টাকা ভাংতি দিয়ে দিলেন । এখন ভাংতি কোত্থেকে আসছে আল্লাহই জানে ।
এসব ঘটনার মধ্যে কোন ঘটনার সাথেই আমি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত না, তবে কিছু ঘটনার আমি প্রত্যক্ষদর্শী, আর কিছু ফ্রেন্ডের কাছ থেকে শোনা । আমাদের আশেপাশে এই টাইপের ঘটনা প্রায় প্রতিদিনই ঘটে । অনেকেই বলে, মেয়েরা সমাজে নিগৃহীত- এসব দেখতে তো মনে হয় ওরা বেশ ভালই আছে । এ তো সমান অধিকার না, বরঞ্চ নারীদের অগ্রাধিকার । এটা অবশ্য খারাপ কিছু না; বরং এটাই হওয়া উচিত । নারীরা হল মায়ের জাতি আর বউয়ের জাতি, এসব অগ্রাধিকার পাওয়ার ওরা যোগ্য দাবিদার
সমাজে ইভটিজিং বা এই টাইপের জিনিসগুলো না থাকলে নারীরাই হতো এ পৃথিবীতে সবচেয়ে সুবিধাপ্রাপ্ত জাতি !

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ময়মনসিংহের ভাষা।

ভূতের গল্প।

খুব সহজে Noun, Adjective, Verb & Adverb চেনার উপায়