বাংলাদেশ, তুমি নারীর বিকশিত হবার সমস্ত পথ প্রশস্ত করে দাও


বাংলাদেশের মত তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর নারীদের ক্ষেত্রে এই কথাটি মোটামুটি প্রচলিত রয়েছে যে নারীরা শারীরিক ও মানসিকভাবে পুরুষের তুলনায় কিছুটা ‘দুর্বল’ প্রকৃতির হয়। এই দেশের অধিকাংশ পুরুষ এমনকি অধিকাংশ নারীও এই প্রচলিত ধারণাকে বিশ্বাস করেন। যদি সাধারণভাবে সরলীকরণ করে এই বিষয়টা বিশ্লেষণ করা যায় তাহলে শারিরীক গঠনের ক্ষেত্রে উপরের প্রচলিত ধারণাটি হয়ত কিছু ক্ষেত্রে সত্য।

কিন্তু প্রশ্ন হলো এই অসম তুলনার প্রশ্নটি কবে থেকে উত্থিত হলো? তাহলে একজন পুরুষ তো সন্তান ধারণ করতে পারে না। এই প্রশ্নে পুরুষের এটাকে প্রাকৃতিকভাবে ‘অক্ষমতা’ ভাবা হয় না কেন? আসলে এই অসম তুলনার জন্ম দিয়েছে উগ্র পুরুষ শাসিত বিশেষায়িত কিছু সমাজ। পৃথিবীতে অনেক সমাজ রয়েছে যেখানে পুরুষদের থেকে নারীরা শারিরীকভাবে অনেক বেশি শক্তিশালী। সেই প্রশ্নটি সামনে আনলে তখন বিষয়টি কিভাবে ব্যাখ্যা করতে চাইবো আমরা যারা এই পুরুষ শাসিত সমাজের প্রতিনিধি?

এই সমাজগুলো আসলে একজন নারীকে দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত করে তাঁদের শুধুমাত্র ভোগের বস্তু হিসেবেই চিত্রায়িত করতে চায়নি কি? আর মানসিক সক্ষমতার কথা বললে এটা বৈজ্ঞানিকভাবেই প্রমাণিত যে একজন নারী একজন পুরুষের থেকে মানসিকভাবে অনেক বেশি শক্তিশালী। কিন্তু প্রতিনিয়ত এই সমাজ নারীদের যেভাবে ‘মানসিক চাপ ও যন্ত্রণার’ মধ্যে রেখে নারীদেরকে ভাবাতে বাধ্য করে যে, তুমি যা কিছুই করো না কেন তুমি পুরুষের থেকে অনেক দুর্বল। ব্যক্তিগতভাবে এই অসম তুলনায় বিশ্বাস করি না।

তবে এখানে আরো জটিল কিছু প্রশ্নও রয়েছে। নারীদের স্বাধীনতার নাম করে ‘উগ্র নারীবাদী কিছু ব্যবসায়ী গ্রুপের’ নারী জাগরণের নামে ঐ একই কায়দায় নারীদের শোষণ করার কিছু আন্দোলন নারীদের অগ্রগতিকে থামিয়ে দিয়ে পক্ষান্তরে পুরুষশাসিত ‘উগ্র সমাজেরই’ আধিপত্য টিকিয়ে রাখতে চাইছে! এটিও একটি মারাত্মক প্রবণতা। এখানে নারীদেরকে অনেক বেশি সাবধান হতে হবে। সত্যিকারের শিক্ষা তথা নৈতিক শিক্ষায় বলীয়ান হয়ে নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে।

এখানে ধর্ম-ব্যাবসায়ীরা, ধর্মের দোহাই তুলে সবচেয়ে বড় বাধাটি দিতে চাইবে। এসব কিছু মোকাবেলা করার জন্য তাদের ধর্মীয় শিক্ষারও সংস্পর্শে আসতে হবে যাতে করে ধর্মের উল্টো ব্যাখ্যা দিয়ে নারীদেরকে কেউ আটকে রাখতে না পারে। পৃথিবীর প্রায় সব ধর্মের অনুসারী নারীরাই বিভিন্ন মুক্তি-সংগ্রামের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে বীরের মুকুট ছিনিয়ে এনেছিলেন। খোদ ইসলাম ধর্মেও নারীরা স্ব-শরীরে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে বীরের খেতাবে ভূষিত হয়েছিলেন। সুতরাং কোন কিছুই বাধা নয়।

মূল সমস্যা হলো, পৃথিবীর রক্ষণশীল সমাজগুলো নারীদের বিকশিত হওয়ার সুযোগটাই দিতে চাইছে না। সুযোগ পেলে নারীরা আকাশ ছুঁবে। সমুদ্রের তলদেশে গিয়ে মনিমুক্তা সংগ্রহ করে আনবে। কিন্তু সবচেয়ে দুঃখজনক সত্য হলো নারীদেরকে নিজেদেরই সেই সুযোগ তৈরী করে নিতে হবে। পুরুষ শাসিত কর্তৃত্ববাদী সমাজ কোন দিনও এই সুযোগ করে দিতে চাইবে না! তবুও বাংলাদেশর কাছে এই প্রার্থনা। বাংলাদেশ, তুমি নারীর বিকশিত হবার সমস্ত পথ প্রশস্ত করে দাও।

এম. এ. সাঈদ শুভ

গবেষক

ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজ

রাজশাহী বিশ্বিবদ্যালয়

ইমেইল: sayeedlaw@gmail.com

মন্তব্যসমূহ

  1. Casino - Dr. mcd.com
    Casino in San Diego 수원 출장샵 is the perfect place 수원 출장샵 to be if you're into the gambling industry. You're one of the 영주 출장샵 few 세종특별자치 출장마사지 places where casinos get the Casino Promotion: $300 Free No DepositCasino Bonus: $300 Free No Deposit Rating: 4.5 · 부산광역 출장마사지 ‎6 reviews

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ময়মনসিংহের ভাষা।

ভূতের গল্প।

খুব সহজে Noun, Adjective, Verb & Adverb চেনার উপায়