কক্সবাজার ভ্রমণ।
সমুদ্রে নামার আগে সতর্কতা:
সমুদ্রে নামার আগে অবশ্যই জোয়ার-ভাটার সময় জেনে নিন। এ সম্পর্কিত ইয়াছির লাইফ গার্ডের বেশ কয়েকটি সাইনবোর্ড ও পতাকা রয়েছে বিচের বিভিন্ন স্থানে। জোয়ারের সময় সমুদ্রে গোসলে নামা নিরাপদ। এ সময় তাই জোয়ারের সময় নির্দেশিত থাকে, পাশাপাশি সবুজ পতাকা ওড়ানো হয়।
ভাটার সময়ে সমুদ্রে স্নান বিপজ্জনক ভাটার টানে মুহূর্তেই হারিয়ে যেতে পারে যে কেউ। বিস্তীর্ণ বেলাভূমি, সারি সারি ঝাউবন, সৈকতে আছড়ে পড়া বিশাল ঢেউ। কক্সবাজার সৈকত ভ্রমণের শুরুটা হতে পারে লাবনী পয়েন্ট থেকে। লাবনী বিচ ধরে হেঁটে হেঁটে পূর্ব দিকে সোজা চলে যাওয়া যায় হিমছড়ির দিকে। যতোই সামনে এগুবেন ততোই সুন্দর এ সৈকত। সকাল বেলা বের হলে এ সৌন্দর্যের সাথে বাড়তি পাওনা হবে নানান বয়সী জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য। শুধু সমুদ্র সৈকতই নয়, কক্সবাজার শহরের বৌদ্ধ মন্দির, বার্মিজ মার্কেট, হিলটপ রেস্টহাউস ইত্যাদি কক্সবাজার ভ্রমণের অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান। কক্সবাজার শহরের জাদি পাহাড়ের উপরে রয়েছে বেশ কয়েকটি প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দির। শহরের যে কোন জায়গা থেকেই রিকশায় আসা যায় এখানে। সান বাঁধানো সিঁড়ি ভেঙ্গে জাদির পাহাড়ের উপরে উঠলে সাদা রঙের এসব বৌদ্ধ প্যাগোডা দেখে ভালো লাগবে। এই পাহাড়ের উপর থেকে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন স্থান দেখতে পাওয়া যায়। শহরের আরেক জায়গায় রয়েছে অগ্ব্বমেধ্যা কেয়াং নামে আরেকটি বৌদ্ধ প্যাগোডা। কাঠের তৈরি প্রাচীন এ বৌদ্ধ মন্দিরটি দেখে আসতে ভুলবেন না।
তাই এ সময় বিচ এলাকায় ভাটার সময় লেখাসহ লাল পতাকা ওড়ানো থাকলে সমুদ্রে নামা থেকে বিরত থাকুন। কোনোভাবেই দূরে যাবেন না।
পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। প্রায় ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ বাংলাদেশের পর্যটন রাজধানী বলা হয় এ জায়গাটিকে। সড়কপথে ঢাকা থেকে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে নয়নাভিরাম এ সমুদ্র সৈকত। এখানকার সমুদ্রের পানিতে গোসল, সূর্যাস্তের মনোহারা দৃশ্য দেখেও ভালো লাগবে।
লাবনী পয়েন্ট থেকে কলাতলী বিচ হেটে যেতে ১৫ মিনিট লাগবে। লাবণী পয়েন্টে পাবেন ঝিনুক মার্কেট এছাড়াও ছোট বড় অনেক দোকান যেখানে নানারকম জিনিসের পসরা সাজিয়েছে দোকানীরা যা পর্যটকদের জন্য বাড়তি আকর্ষণ। এছাড়া কলাতলী বিচে আছে সমুদ্রের ধার ঘেষে বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট যেখানে খেতে খেতে মনোরম সূর্যাস্ত দেখতে পাবেন।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের একটি অংশের নাম লাবনী পয়েন্ট। বিস্তীর্ণ বেলাভূমি, সারি সারি ঝাউবন, সৈকতে আছড়ে পড়া বিশাল ঢেউ। কক্সবাজার সৈকত ভ্রমণের শুরুটা হতে পারে লাবনী পয়েন্ট থেকে। লাবনী বিচ ধরে হেঁটে হেঁটে পূর্ব দিকে সোজা চলে যাওয়া যায় হিমছড়ির দিকে। যতোই সামনে এগুবেন ততোই সুন্দর এ সৈকত। সকাল বেলা বের হলে এ সৌন্দর্যের সাথে বাড়তি পাওনা হবে নানান বয়সী জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য। শুধু সমুদ্র সৈকতই নয়, কক্সবাজার শহরের বৌদ্ধ মন্দির, বার্মিজ মার্কেট, হিলটপ রেস্টহাউস ইত্যাদি কক্সবাজার ভ্রমণের অন্যতম স্থান।
কক্সবাজার শহরের জাদি পাহাড়ের উপরে রয়েছে বেশ কয়েকটি প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দির। শহরের যে কোন জায়গা থেকেই রিকশায় আসা যায় এখানে। সান বাঁধানো সিঁড়ি ভেঙ্গে জাদির পাহাড়ের উপরে উঠলে সাদা রঙের এসব বৌদ্ধ প্যাগোডা দেখে ভালো লাগবে। এই পাহাড়ের উপর থেকে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন স্থান দেখতে পাওয়া যায়। শহরের আরেক জায়গায় রয়েছে অগ্ব্বমেধ্যা কেয়াং নামে আরেকটি বৌদ্ধ প্যাগোডা। কাঠের তৈরি প্রাচীন এ বৌদ্ধ মন্দিরটি দেখে আসতে ভুলবেন না।
ডুলাহাজরা সাফারী পার্কঃ
কক্সবাজার শহর থেকে ৩৫ কি.মি. উত্তরে এই সাফারী পার্কের অবস্থান। এটি বাংলাদেশের প্রথম সাফারী পার্ক। বিলুপ্তপ্রায় ও বিরল প্রজাতি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও বংশবৃদ্ধিসহ মানুষের চিত্ত বিনোদন, গবেষণা ইত্যাদি পরিচালনার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক সংলগ্ন চকরিয়া উপজেলা এলাকায় স্থাপিত ডুলাহাজারা সাফারী পার্ক।
হিমছড়ি ও ইনানী বিচ ভ্রমনঃ
কক্সবাজারের ১২ থেকে ২২ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে রয়েছে দুটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান। ইনানী সমুদ্র সৈকত যা কক্সবাজার থেকে ৩৫ কি.মি. এবং হিমছড়ি থেকে ১৭ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থিত। একটি হলো হিমছড়ি এবং অন্যটি হলো ইনানী। জেলা সদর হতে ৯ কিঃমিঃ দূরে হিমছড়ি অবস্থিত। কক্সবাজার সমুদ্র থেকে মাত্র ২২ কিলোমিটার দূরে রয়েছে অন্যতম আকর্ষণীয় সমুদ্র সৈকত ইনানী সমুদ্র সৈকত। আর এই সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার পথে মাত্র ১২ কিলোমিটার গেলেই পাওয়া যাবে আরেক দর্শনীয় পর্যটন স্থান হিমছড়ি।পাহাড়, সমুদ্র ও ঝর্ণা সমন্বিত হিমছড়ি অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এক পর্যটন স্পট। পর্যটন মৌসুমে এখানে পর্যটকদের আনাগোণা বেশি পরীলক্ষিত হয়। এখানে কয়েকটি প্রাকৃতিক ঝর্ণা (প্রসবণ) রয়েছে। সিঁড়ি বেয়ে উঁচু পাহাড়ে উঠে সাগর, পাহাড় ও কক্সবাজারের নৈসর্গিক সৌর্ন্দয অতিসহজে উপভোগ করা যায়। হিমছড়ি যাওয়ার পথিমধ্যে দরিয়ানগরসহ (ভাংগামোড়া) অনেক পিকনিক স্পট আছে। ছোট ছোট সুরেলা ঝর্ণার পানি প্রবাহ অবলোকন করতে চাইলে পর্যটকদের ভরা পর্যটন মৌসুম ব্যতীত বর্ষা মৌসুমে আসতে হবে।
মূল বিচে যেতে ছোট্ট একটি শাখা নদী পেরুতে হয়। নদী পারাপারের জন্য একটি বেইলি সেতু থাকলেও তা এমন জায়গায় স্থাপন করা হয়েছে, যাতে উঠতে এবং নামতে পানি মাড়িয়ে যেতে হয়। ফলে মহিলা ও শিশুদের কাপড় ভিজে যাচ্ছে। এদিকে যথাযথ সুবিধা দিতে না পারলেও টোল ঠিকই আদায় করা হচ্ছে। বেইলি ব্রিজ পারাপারে টোল জনপ্রতি ৫ টাকা। বেইলি ব্রিজ পেরিয়ে একটু হাঁটলেই দেখা মেলে সবুজ প্রবালের। সমুদ্র অসংখ্য প্রবাল ভাসিয়ে এনে এক জায়গায় জড়ো করেছে। দর্শনার্থীদের অনেকেই প্রবালের উপর দাঁড়িয়ে বসে ছবি তুলছেন, অনেকেই প্রবালের ছোট অংশ পকেটে পুরছেন। আরেকটু সামনে এগুলেই বিস্তীর্ণ সাগর। পর্যটকরা সাগরের কাছে এসে যেন উন্মাদ হয়ে গেছেন। অতি উৎসাহীরা পানিতে নেমে একজন আরেকজনকে ভিজিয়ে দিচ্ছেন, লাফালাফি দাপাদাপি করছেন। শিশু থেকে বয়স্ক সবাই আনন্দে মাতোয়ারা। সমুদ্র সব বয়সী মানুষকে এক জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে। তবে পর্যটন স্পট হিসেবে যে অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা থাকার কথা তার কোনোটাই এই বিচে নেই।ড্রেস চেঞ্জিং রুম ও টয়লেট না থাকায় অনেক পর্যটক বিশেষত মহিলারা বিপাকে পড়ছেন। তাছাড়া কোনো হোটেল বা খাবারের দোকান নেই। ফলে ইচ্ছা থাকলেও এখানে এসে রাত যাপন করতে পারছেন না। রয়েছে নিরাপত্তার অভাব। একজন স্থানীয় জেলের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সন্ধ্যার পর এখানে ছিনতাই আর ডাকাতির ঘটনা ঘটে।অনেকেই এসে কিছুক্ষণ থেকেই চলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
খাবারঃ
প্রতিটি খাবারের মূল্য প্রকৃত মূল্যের চেয়ে ৫ থেকে ১৫ টাকা বেশি। বিচের পাড়ে সারিবদ্ধভাবে ৯টি ডাবের দোকান। এখানকার ডাব অনেক সুস্বাদু। তাই অধিকাংশ পর্যটকই ডাবের স্বাদ চেখে দেখতে ব্যস্ত।
চিংড়ি, রূপচাঁদা, লাইট্যা, ছুরি মাছসহ মজাদার শুটকি মাছের ভর্তার প্রতিই পর্যটকদের আকর্ষণ বেশি থাকে।
বেশীর ভাগ রেস্টুরেন্ট কলাতলী রোডে অবস্থিত। উল্লেখযোগ্য রেস্টুরেন্টগুলো হচ্ছে – পৌশী রেস্টুরেন্ট, ঝাউবন রেস্টুরেন্ট, লাইভ ফিস রেস্টুরেন্ট, নিরিবিলি অর্কিড ক্লাব এন্ড রেস্টুরেন্ট, মারমেইড ক্যাফে, ডিভাইন সী স্টোন ক্যাফে, কয়লা, স্টোন ফরেস্ট, তারাঙ্গা রেস্টুরেন্ট, কাশবন রেস্টুরেন্ট, পানকৌড়ী রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি। এসব হোটেল ভাত, বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ, মাংস, ভর্তা-ভাজি, শুটকি মাছ থেকে শুরু করে সব ধরনের খাবার পাবেন। তবে খাবার অর্ডার দেয়ার আগে দাম জেনে নিবেন। কলাতলী বিচে সমুদ্রের একেবারে সাথে বেশ কিছু রেস্তোরা আছে সেখানে বিকালের নাস্তা খাবার পাশাপাশি সমুদ্রের সৌন্দর্য ও সুর্যাস্ত উপভোগ করতে পারবেন।
স্পিডবোট:
বিচে বেশ কয়েকটি স্পিডবোট চলে। মেইন বিচ থেকে এগুলো চলাচল করে লাবণী পয়েন্ট পর্যন্ত। ভাড়া এক রাউন্ড ১০০/২০০টাকা। এছাড়া খোলা স্পিডবোটের সাহায্যে চলে লাইফ বোট জনপ্রতি ভাড়া ২৫০/৩৫০ টাকা।
বিচ বাইক:
তিন চাকার বেশ কয়েকটি বিচে চলার উপযোগী বাইক কক্সবাজার সাগর সৈকতে চলাচল করে। প্রায় ১ কিলোমিটার দূরত্বে এসব বাইক রাউন্ড প্রতি ৫০/১৫০ টাকা করে পর্যটকদের প্রদান করতে হয়।
এছাড়া অন্যান্য যেসব দর্শনীয় স্থান কক্সবাজার গেলে দেখতে পাবেন তার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য হচ্ছে – এয়ারপোর্ট এলাকা, বার্মিজ মার্কেট, শুটকি মার্কেট, হিলটপ সার্কিট হাউস ও এর পাশের রাডার ষ্টেশন, লাইট হাউস, আগ্গা মেধা বৌদ্ধ ক্যাং ও মাহাসিংদোগী বৌদ্ধ ক্যাং, মাথিনের কূপ, গোলাপ চাষ প্রকল্প, বদর মোকাম মসজিদ, চিংড়ী প্রসেসিং জোন, মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র, লবণ উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা, রামকোট তীর্থধাম, কানা রাজার সুড়ংগ, রামুর বৌদ্ধ মন্দির, লামার পাড়া বৌদ্ধ বিহার, কুতুবদিয়া দ্বীপের বাতিঘর, শাহপরীর দ্বীপ, টেকনাফ বিচ ইত্যাদি।
বিচের বালু বা পানিতে কোন প্রকার ময়লা আবর্জনা, চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিকের বোতল, সিগারেটের ফিল্টার ইত্যাদি ফেলা থেকে বিরত থাকুন। এর সৌন্দর্য রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। যেহেতু সমুদ্র দেখতে যাচ্ছেন তাই যাবার পূর্বে আবহাওয়া সম্পর্কে তথ্য জেনে নিন।
স্পিডবোট ও বাইক ভাড়া কিছুটা তারতম্য ঘটতে পারে।
অবস্থান:
কক্সবাজার সদর
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন